আমি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নই, তাই মায়ের জন্য দামোদর দড়িয়া পাড়ি দেয়া তো দূর কি বাত, ভয়ে পুকুরেই নামতাম না। ভিতুর ডিম একটা, যে কিনা পানিতে নামতে ভয় পেত। না তেমন প্রখর স্মরণ শক্তির অধিকারী, প্রতিনিয়ত ভুলে যাই কি করার ছিল আর কি করতে হবে! তাই বিদ্যাসাগর মহাশয় এর মত পাঠ শেষে পাঠ্য বই বা খাতার পাতা ছিড়ে ফেলা হয়নি, উল্টে পরের পাতায় যেতে হয়েছে। দুর্বল চিত্তের হলে যা হয় আরকি? না নিজের উপরে না নিজের স্মরণশক্তির উপরে আস্থা আছে। হ্যাঁ উল্টানো পাতা রেখে দেয়ার মাঝে একটা সূক্ষ্ম দুরভিসন্ধি ছিল, জীবনের কোন সময়ে যদি প্রত্যাবর্তন করা সম্ভব হয় তবে পুরনো পাঠ আবার ঝালিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। কিন্তু হলো আর কই। যে পাতা একবার উল্টে রেখেছি তার পুনর্বার পাল্টে দেখা হলো কই? যদিও বা দেখার সাধ ছিল খুব। জীবন যেন প্রতিনিয়ত দৌড়ায়, আর সেই দ্রুততম দুনিয়ার সাথে বেমানান আমি যেন প্রতিনিয়ত সমঝোতা করে যাচ্ছি তাই কিছু পাতা না পড়ে উল্টে রেখে যাচ্ছি। আর একটু একটু করে আমার আমি কে হারিয়ে ফেলছি। হারিয়ে ফেলেছি জীবনের খুব সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বোধ, অনুভূতির মৃদু অনুরণন গুলো। যা প্রতিনিয়ত আমায় পীড়া দেয়, ভাবালুতায় ডুবিয়ে রাখে, মুহূর্তের তন্দ্রাই আমায় নিয়ে যায় উল্টোনো পাতাগুলোর জীবন্ত প্রচ্ছদে। ওই প্রচ্ছদে যদি আটকে যেতাম তবে কতই না ভালো হতো, কিন্তু তন্দ্রা ভাঙনো এই জাগানিয়া কতই বিরূপ। এসব কি আমার জড়বাদীতা? নাকি পশ্চাৎপদতা? যদি তা হয় তবে তাই হোক, তবু আমি ফিরে পেতে চাই আমার শৈশবের অফুরন্ত সময়, আর আমাকে ঘিরে নির্মল নিষ্কলঙ্ক চিন্তা জগতে।পৃথিবীর বিনিময়ে হলেও আমার আমি কে চাই আর একটিবার ফিরে যেতে চাই আমি হয়ে, দুরন্ত শৈশব আর কৈশোরে।
|
Reciter's blog/
|